পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে [2025]

আপনি কি জানতে চান, পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে? জরুরি কোনো কাজে কিংবা ঘুরতে দেশের বাইরে যাবেন, অথচ পাসপোর্ট করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে কী করণীয়, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। তাই চলুন জেনে নিই, ই-পাসপোর্ট করতে কী কী লাগে

এই পোস্ট পড়ার পর, পাসপোর্ট কি কি কাগজপত্র লাগবে, কিভাবে কাগজ সাজাবেন, কত টাকা লাগবে, কোথায় টাকা জমা দিবেন ইত্যাদি সম্পর্কে আপনার একটি ধারণা আসবে।

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

বাংলাদেশের পাসপোর্ট পোর্টালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ই-পাসপোর্ট করতে জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদপত্র, পেশা প্রমাণের কাগজ লাগবে। তবে, এক্ষেত্রে আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তা হলো ই-পাসপোর্ট আবেদনকারী ব্যক্তির বয়স, পেশা, বৈবাহিক অবস্থা, আগের পাসপোর্টে ভুল আছে কি না।

পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে

ই-পাসপোর্টের জন্য কি কি কাগজ লাগবে? যে কাগজগুলো পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হয়:

০১) অ্যাপ্লিকেশন সামারি। (ই-পাসপোর্টের আবেদন অনলাইন কপি (প্রিন্ট কপি) আবেদন করার পর পাবেন)
০২) ই-চালান বা এ-চালান কপি। (অনলাইনে বা অফলাইনে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ। পাসপোর্টের টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া ভালো।)
০৩) প্রিন্ট সামারি (ই-পাসপোর্টের আবেদন অনলাইন কপি (প্রিন্ট কপি) আবেদন করার পর পাবেন)
০৪) জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি বা জন্ম নিবন্ধন। (মূল কপি সাথে রাখবেন। আর রঙিন ফটোকপি জমা দিবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) হতে হবে।)
০৫] বাবা/মা/অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি। (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক। বড়দের ক্ষেত্রে ঐচ্ছিক হলেও ঝামেলা এড়াতে জমা দিবেন।)
০৬) নাগরিক সনদপত্র বা চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট। (বর্তমান ঠিকানারটা জমা দিবেন।)
০৭) কাবিন নামা। (বিবাহিত হলে লাগবে।)
০৮) বিদ্যুৎ/গ্যাস বিলের কপি। (ইউটিলিটি বিল)
০৯) পেশাগত প্রমাণ পত্র। (যেমন: স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, প্রতিষ্ঠানের আইডী কার্ড)
১০) অনাপত্তি আবেদন পত্র। (আপনি যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকেন, তাহলে এটা দিতে হয়। এটা আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের প্যাডে প্রিন্ট করে নিবেন)।
১১) ট্রেড লাইসেন্স/GO/NOC। ( ব্যবসায়ী / সরকারি / চাকুরীজীবিদের জন্য)।
১২) পুরানো পাসপোর্টের কপি। (পূর্বে পাসপোর্ট থাকলে সেটার ফটোকপি এবং মূল কপি।)

উল্লেখ্য যে! ই-পাসপোর্ট করার জন্য কোনো কাগজ সত্যায়িত করার প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন: ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম


অ্যাপ্লিকেশন সামারি

ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার পর আপনি এমন এক পৃষ্ঠার অ্যাপ্লিকেশন সামারি পাবেন। এখানে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, Online Registration ID (OID), আবেদনের মেয়াদ, পাসপোর্ট অফিসের ঠিকানা, পাসপোর্টের ধরণ, ভ্যালিডিটি, পাসপোর্টের দাম ইত্যাদি বিষয়ের একটা সামারি থাকবে। যা অ্যাপ্লিকেশন সামারি নামে পরিচিত। এটি আপনি আবেদন করার পর ডাউনলোড করতে পারবেন।

Photo Credit: eServiceBD

চালান কপি

পাসপোর্ট আবেদন করার পর প্রথম কাজ হচ্ছে, ই-পাসপোর্ট ফি বা টাকা জমা দেওয়া। আপনি ই-চালান বা এ-চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে পারবেন। তবে আমার মতে, আবেদন করার সময়য় অফলাইন পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া উত্তম।

আর আপনি নিজে নিজে অনলাইনে এ-চালান জমা দিতে ভিজিট করুন: https://ibas.finance.gov.bd/acs/general/sales#/home/dashboard

পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন নম্বর Verify করে তথ্য দিন।

ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী

আবেদনকারীর জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) অনুযায়ী আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে।

১৮ বছরের কম বয়সী আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) না থাকলে, তার পিতা অথবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

৬। জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) নিম্নোক্ত বয়স অনুসারে দাখিল করতে হবে-

(ক) ১৮ বছরের নিম্নে হলে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version).

(খ) ১৮-২০ বছর হলে জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) 

(গ) ২০ বছরের উর্ধে হলে জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (NID) আবশ্যক । তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন হতে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) গ্রহণযোগ্য হবে।

৭। তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নম্বরগুলো অবশ্যই পূরণীয়।

৮। দত্তক/অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনের সাথে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশ দাখিল করতে হবে।

আবেদন বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ঠ বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস/আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস/বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করতে হবে।

১৮ বছরের নিম্নের এবং ৬৫ বছরের ‍উর্ধ্বে সকল আবেদনে ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ০৫ বছর এবং ৪৮ পৃষ্ঠার।

১১। প্রাসঙ্গিক টেকনিক্যাল সনদসমূহ (যেমন: ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার ইত্যাদি) আপলোড/সংযোজন করতে হবে।

১২। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক জিও (GO)/এনওসি (NOC)/ প্রত্যয়নপত্র/ অবসরোত্তর ছুটির আদেশ (PRL Order)/ পেনশন বই আপলোড/সংযোজন করতে হবে যা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের নিজ নিজ Website এ আপলোড থাকতে হবে। 

প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ/নিকাহনামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে।

দেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফি এর উপর নির্ধারিত হারে ভ্যাট (VAT) সহ অন্যান্য চার্জ (যদি থাকে) অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হবে। বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রেও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদেয় হবে।

কূটনৈতিক পাসপোর্টের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও ওয়েলফেয়ার উইং (Consular and Welfare Wing) অথবা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।

বৈদেশিক মিশন হতে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।

অতি জরুরী পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে (নতুন ইস্যু) নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ পূর্বক আবশ্যিকভাবে আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে।

১৮। (ক) দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ২ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

(খ) দেশের অভ্যন্তরে জরুরী পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

(গ) দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

১৯। আবেদনের সময় মূল জাতীয় ‍পরিচয়পত্র (NID), অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ, সরকারি আদেশ (GO)/অনাপত্তি (NOC) প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।

২০। পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে।

২১। হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে।

২২। ০৬ বছর বয়সের নিম্নের আবেদনের ক্ষেত্রে ৩ আর (3R Size) সাইজের ( ল্যাব প্রিন্ট গ্রে ব্যাকগ্রউন্ড ) ছবি দাখিল করতে হবে।

২৩। পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় জিডি করতে হবে। পুনরায় পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সময় পুরাতন পাসপোর্টের ফটোকপি এবং জিডি কপিসহ আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে ।

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?

যারা ই-পাসপোর্ট করতে চান তাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে? ২০২৩ সালে ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি নিম্নরূপ:

বছর পৃষ্ঠা রেগুলার ডেলিভারি (১৫ থেকে ২১ দিন) এক্সপ্রেস ডেলিভারি (৫থেকে ৭দিন) সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি (২ দিন)
৪৮ ৪,০২৫ ৬,৩২৫ ৮,৬২৫
৬৪ ৬,৩২৫ ৮,৬২৫ ১২,০৭৫
১০ ৪৮ ৫,৭৫০ ৮,০৫০ ১০,৩৫০
১০ ৬৪ ৮,০৫০ ১০,৩৫০ ১৩,৮০০

আরও পড়ুন: পাসপোর্টের ভুল সংশোধনে কী কী লাগে?

ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন কীভাবে করবেন?

এখন চলুন জেনে নিই, ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন কীভাবে করবেন। ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন: https://passport.qnabangla.com/apply-for-epassport

ই-মেইল ভেরিফিকেশনের পর, পুনরায় ওয়েবসাইটে লগইন করুন। এবার “Apply for a New Passport” বাটনে ক্লিক করুন। Passport Type হিসেবে সাধারণ পাসপোর্ট হলে “Ordinary” এবং সরকারি আদেশে বা NOC-এর মাধ্যমে পাসপোর্ট “Official” সিলেক্ট করুন। এখন “Save and continue”-তে ক্লিক করুন।

এর পরে নিচের পেজে আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য ইংরেজিতে সঠিকভাবে পূরণ করুন।

ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করুন।

এখানে আপনার নাম, তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্র বা নম্বর দিন এবং Save and Continue-তে ক্লিক করুন।
আইডি ডকুমেন্টস
আইডি ডকুমেন্টস ধাপে আপনার আগের পাসপোর্ট আছে কি না, অন্য কোনো দেশের পাসপোর্ট আছে কি না এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধনের তথ্য দিতে হবে।
আপনার পূর্বের কোনো পাসপোর্ট থাকলে “Yes” দিন আর না থাকলে “No, I don’t have any previous/ handwritten passport.”
 

পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউ আবেদন

যারা পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউ আবেদন করবেন তারা এ ক্ষেত্রে অবশ্যই “Yes” দিয়ে আগের পাসপোর্টের তথ্য দেবেন।
 
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে?
 
ঠিকানা
আপনার বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে লিখুন। যদি বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা একই হয়, নিচের বক্সে টিক দিন।
 
জরুরি যোগাযোগ
জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য আপনার পরিবারের বাবা, মা, ভাই বা অন্য কারো নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দিন।
 
পাসপোর্টের মেয়াদ ও পৃষ্ঠা সংখ্যা
এবার আপনার পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা ও মেয়াদ সিলেক্ট করুন।
 
আরও পড়ুন: আরও শক্তিশালী হলো বাংলাদেশের পাসপোর্ট
 
ডেলিভারি অপশন
পাসপোর্ট ডেলিভারি সাধারণ না জরুরি তা সিলেক্ট করুন। সাধারণ হলে “Ordinary” এবং জরুরি হলে “Express” সিলেক্ট করুন।
 
সবশেষে আপনার সব তথ্য পুনরায় যাচাই করে আবেদন জমা দিতে “Submit” বাটনে ক্লিক করুন।
 

ই-পাসপোর্ট ফি প্রদান ও আবেদন প্রিন্ট

আপনার আবেদন করা হলে প্রিন্ট করার জন্য আপনি দুটি পৃষ্ঠা পাবেন। সেগুলো হলো:
অ্যাপ্লিকেশন সামারি
অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ফর্ম
 
এগুলো প্রিন্ট করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। এ সময় আপনার আরও লাগবে টাকা জমা দেয়ার স্লিপ, এনআইডির ফটোকপি, (আগের পাসপোর্ট থাকলে ফটোকপি)।




পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে অনলাইনে সঠিক ভাবে ই পাসপোর্ট আবেদন করার পরেও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে নানাবিধ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আমরা জানতে চলেছি পাসপোর্ট অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন হতে সর্বশেষ নির্দেশাবলীতে ই পাসপোর্ট করতে যে সব কাগজপত্র কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সাধারণত জেলা শহর কিংবা বিভাগীয় শহরে অবস্থিত হওয়ার ফলে পাসপোর্ট অফিসে যাতায়াত সকলের জন্য খুব একটা সহজ হয় না। এতে সময় এবং অর্থ উভহয় বেয় হয়। এসবের পরেও যদি পাসপোর্ট করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে না নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদনটি সম্পন্ন না হয় তারচেয়ে কষ্ট আর কোথাও নেই।

তাই পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় এবং পাসপোর্ট অফিসে যে সকল কাগজপত্র জমা নিয়ে থাকে বা চেয়ে থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে লেখা টি সাজানো হয়েছে।

ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে (২০২৪)

বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সর্বশেষ নির্দেশনা 23 Oct 2022 অনুসারে ই পাসপোর্ট করতে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID Card) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (Birth Certificate) প্রয়োজন। তার সাথে নাগরিকত্ব সনদ এবং পেশার প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়। সরকারি চাকরিজীবীদের ই পাসপোর্ট করতে GO অথবা NOC প্রয়োজন।

উপরে উল্লেখিত মৌলিক বিষয়গুলো ছাড়াও আরো বেশ কিছু কাগজপত্র ই পাসপোর্ট আবেদনের সাথে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হয়। আবেদনকারীর বয়স, পেশা, পূর্বে পাসপোর্ট থাকা বা না থাকার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে ভিন্নতা থাকতে পারে।

ই-পাসপোর্ট আবেদন করা হয়ে যাওয়ার পরে যে কাজটি করতে হয় তা হচ্ছে অনলাইনে অথবা ব্যাংক ড্রাফের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট ফি প্রদান করা। এর পরেই চলে আসে পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একত্রীকরণ। এর জন্য জানা দরকার ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।

ই-পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে

বয়স ১৮ কিংবা তার বেশি হলে ই পাসপোর্ট করতে জাতীয় পরিচয় পত্র, নাগরিক সনদ, পেশাজীবী প্রমাণপত্র এবং ২০ বছরের কম বয়সী যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তারা NID Card এর পরিবর্তে অনলাইন জন্ম সনদ প্রয়োজন হবে।
 
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে



পাসপোর্ট করার জন্য যে সকল কাগজপত্র পাসপোর্ট অফিস জমা নিয়ে থাকে তার তালিকা নিচে প্রকাশ করা হলো

বয়স ১৮ বা তার বেশি হলে পাসপোর্ট করতে যা যা লাগবে

যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট করতে যে সকল ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা হলোঃ
এই পোস্ট গুলো দেখতে পারেন…
  • পাসপোর্ট হারানো জিডি করার নিয়ম
  • ঘরেবসে ই পাসপোর্ট চেকিং | অনলাইনে ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম ২০২৩
  • আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস ফোন নাম্বার, ঠিকানা | পাসপোর্ট হেল্প লাইন
আপনার জন্য নির্বাচিত পোস্টসমূহ:

  • মূল জাতীয় পরিচয় পত্র (NID Card) এবং এর ফটোকপি
  • ই পাসপোর্ট আবেদনের সামারি – Application Summery
  • পাসপোর্ট আবেদনের ফরম – Application Form
  • পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান / ব্যাংক ড্রাফ কপি
  • নাগরিক সনদ
  • পেশাগত সনদের ফটোকপি

২০ বছরের কম যাদের NID Card হয়নি

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন ২০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রযোজ্য। যাদের বয়স 20 বছরের কম এবং এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র হয়নি তারা চাইলে তাদের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ বেবহার করে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবে। 20 বছরের কম বয়সী ও জাতীয় পরিচয় পত্র হয়নি তাদের পাসপোর্ট করার জন্য যা যা প্রয়োজন-
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRC) ও এর ফটোকপি
  • ই পাসপোর্ট আবেদনের – Application Summery
  • পাসপোর্ট আবেদনের ফরম – Application Form
  • পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান / ব্যাংক ড্রাফ কপি
  • নাগরিক সনদ
  • পেশা ছাত্র ছাত্রী হলে Student ID / Certificate

সরকারি চাকরিজীবীদের ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

সরকারি কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীদের পাসপোর্ট আবেদন করতে সাধারণ জনগণের একটি ডকুমেন্ট বেশি লাগে, তা হচ্ছে NOC (No Objection Certificate) বা GO (Government Order) পেপার। এছাড়া বাকি সকল কাগজপত্র একজন সাধারণ নাগরিকের যা প্রয়োজন তাই এখানে প্রযোজ্য।
 
NOC: যদি কোনো সরকারি চাকরিজীবী নিজ প্রয়োজনে পাসপোর্ট করেন তাহলে তার বিভাগ, অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তিপত্র (No Objection Certificate) সংগ্রহ করতে হয়
 
GO: সরকারি কাজে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য সরকারি আদেশ বা Government Order পাসপোর্ট করার সময় দাখিল করতে হয়।

শিশুদের ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

শিশুদের ই পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের পাশাপাশি পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক।
  1. অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
  2. পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
  3. Online Application Summary
  4. Application Form
  5. পাসপোর্ট ফি পরিশোধের A Challan
  6. 3R Size ছবি Lab Print, Gray Background
Note: প্রয়োজন অনুসারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিচে উল্লেখিত কাগজগুলো কোনটি প্রয়োজন হতে পারে।
  • পুরাতন পাসপোর্ট (পাসপোর্ট রি ইস্যুর ক্ষেত্রে)
  • চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট
  • ইউটিলিটি বিলের কপি (বিদ্যুৎ অথবা গ্যাস বিল)
  • পাসপোর্ট হারানোর জিডি (পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে)
হারানো পাসপোর্টের জিডি লেখার নিয়ম ও জিডির নমুনা সংগ্রহ করুন।
 

পাসপোর্ট করতে কি কি জমা দিতে হবে

বয়স বা পেশাগত পার্থক্যের কারণে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে একেক জনের একেক রকম অতিরিক্ত ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। পাসপোর্ট করতে কোন কাগজ কি কাজে প্রয়োজন হয় তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো

জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ

পাসপোর্ট আধিদপ্তরের আপডেট মতে ১৮ বছরের বেশি বয়সী, যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র আছে তারা পাসপোর্ট করতে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করবে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র হয়নি তারা ২০ বছর পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবে। জন্ম নিবন্ধনটি অবশ্যই অনলাইন থাকতে হবে।
 
১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে হলে National Identity Card অথবা Birth Certificate যেকোনো একটি ব্যবহার করা সুযোগ করেছে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্মনিবন্ধনে ভুল তথ্য রয়েছে তারা এর মাধ্যমে সুবিধা নিতে পারবে।

পাসপোর্ট আবেদনের সামারি

অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদনের শেষের দিকে Application Summary এবং Registration Form ডাউনলোড অথবা পিডিএফ আকারে সেভ করার অপশন পাবেন। পাসপোর্ট অফিসে সর্বপ্রথম পাসপোর্ট আবেদনের সামারি এবং অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম চেক করে থাকে।

পাসপোর্ট ফি প্রদানের চালান

ই পাসপোর্ট ফি যদি ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থাৎ চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয় সে ক্ষেত্রে টাকা দেওয়ার পর চালানের রশিদ পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। তবে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করলে তা অ্যাপ্লিকেশন সামারিতে উল্লেখ করা থাকে। অনলাইনে পেমেন্ট করলে ও ডিজিটাল চালান রশিদ সংগ্রহ করা যায়। সেটি সংগ্রহ করে সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

প্রি পুলিশ ভেরিফিকেশন

জরুরী কাজে পাসপোর্ট করতে চাইলে অর্থাৎ যদি সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে ই পাসপোর্ট করতে চান সে ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট আবেদন জমা দেওয়ার সাথে প্রি পুলিশ ভেরিফিকেশন সংযুক্ত করতে হবে। আগে থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন আবেদনের সময় কে ত্বরান্বিত করে।


সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

পাসপোর্ট রি-ইস্যু করতে কি কি লাগে?

পাসপোর্ট রি ইস্যু করতে নতুন পাসপোর্ট আবেদন করতে যা যা লাগে তার সবগুলোই প্রয়োজন। তবে এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডকুমেন্ট হিসেবে পুরাতন পাসপোর্ট এবং এর ফটোকপি নিতে হয়।

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগে?

জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া পাসপোর্ট করা যায়?

আপনার বয়স ২০ বছর অতিক্রম করার আগ পর্যন্ত জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়া অনলাইন জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে পাসপোর্ট করা যায়।

Exit mobile version